আমরা জানি, আমাদের পাকস্থলি এবং অন্ত্রের সাথে শরীরের প্রায় ৮৫% রোগ-ব্যাধির সম্পর্ক। তাই আপনি যদি এই ৮৫% রোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে চান, তাহলে অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে ভাল রাখতে হবে। আর অন্ত্রের স্বাস্থ্যের সাথে দুইটি টার্ম আবশিকভাবে জড়িত; তা হল- প্রোবায়োটিক এবং প্রিবায়োটিক। আপনি যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন বা লাইফস্টাইল ফলো করেন বা সর্বদা সুস্থ থাকতে চান, তাহলে আপনাকে সবার আগে নজর দিতে হবে- পেটের এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের দিকে। আর প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিক হল অন্ত্রের ভাল ব্যাক্টরিয়া বা উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে লালন ও বৃদ্ধি করার উপায়। চলুন স্পষ্টভাবে জেনে নিই।
প্রোবায়োটিক (Probiotic)
আমাদের দেহে মিলিয়ন মিলিয়ন অনুজীব বা জীবণু বাস করে, যেমন- ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাক, ভাইরাস, প্রোটোজোয়া ইত্যাদি। এগুলির সবগুলো কিন্তু দেহের জন্য ক্ষতিকর নয়। এদের মধ্যে কিছু ব্যাক্টিরিয়া এবং ঈস্ট (এক ধরনের ছত্রাক) আছে যারা বেশিরভাগ আমাদের অন্ত্রে বসবাস করে। এরা আমাদের ক্ষতিতো করেইনা বরং বিভিন্ন উপকার করে, যেমন-অন্ত্রের জীবানুদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা, সঠিকভাবে হজমে সহায়তা করা, পেটের গোলমাল দূর করা এবং একটি শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা। এরাই হল প্রোবায়োটিক (Probiotic)। অর্থাৎ অন্ত্র (ক্ষুদ্রান্ত্র ও বৃহদান্ত্রে) এর উপকারী ব্যাক্টেরিয়াকেই বলে প্রোবায়োটিক। এই অর্থেই প্রোবায়োটিক হল এক প্রকার উপকারী জীবাণু।
কিন্তু প্রোবায়োটিক খাওয়া মানে কি? আসলে ব্যবহারের গুনে বা দোষে অর্থটা এমন দাড়িয়ে গেছে যে, যে সমস্ত খাদ্য খেলে এই উপকারী ব্যাকটিয়ে বৃদ্ধি পায়, সেগুলোকেই আমরা প্রোবায়োটিক বলি, যেমন-দই, কেফির, কিমচি ইত্যাদি। এগুলো খেলে পেটের ভাল ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধি পায়। এটা হয় একারনে যে, এই খাবারগুলোতেই জীবন্ত উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। আপনি এগুলো খেলেন মানে পেটের ভিতরে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার চাষাবাদ শুরু করে দিয়েছেন।
প্রিবায়োটিক (Prebiotic)
আমরা জেনেছি, প্রোবায়োটিক হল উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য খাবার। আর প্রিবায়োটিক হল পেটে বা অন্ত্রে যে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বর্তমানে আছে, সেগুলোকে লালন পালন করার জন্য খাবার, যেমন- রসুন, পিয়াজ, কলা, উটস ইত্যাদি।
এগুলো খেলে পেটের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বা প্রোবায়োটিকের পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে এবং এগুলোকে সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। অর্থাৎ প্রিবায়োটিক কোন জীবাণু নয় বরং তন্তু বা আঁশ জাতীয় কিছু খাবার যা প্রোবায়োটিকের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
সুস্বাস্থ্যের জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিক রাখুন।
Related Link-1: প্রিবায়োটিক ও প্রোবায়োটিক আছে কোন কোন খাবারে?
Related Link-2: শরীরের ভাল ব্যাকটেরিয়া আর খারাপ ব্যাকটেরিয়া- এ সম্পর্কে জানেন কি?
Related Link-3: প্রোবায়োটিকঃ আপনার পেটের বন্ধু এবং সুস্থ জীবনযাপনের প্রাকৃতিক গাইড