টাইপ-১ ডায়াবেটিস ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস মানে কি?


Difference between Type 1 and Type 2 Diabetes

ডায়াবেটিস কথাটির সাথে পরিচিত নয় এমন মানুষ খোঁজে পাওয়া যাবেনা। প্রকৃতপক্ষে ডায়াবেটিস কোন রোগ নয়। এটি অনেক অনেক রোগের জন্মদাতা একটি শারীরিক অবস্থা। উচ্চ রক্তচাপ, স্থুলতা, রক্তনালির ব্লক, হার্টের দুর্বলতা, হার্ট ব্লল্ক, ব্রেইন টিউমার, ব্রেইন স্ট্রোক, হার্ট স্ট্রোক, লিভার সিরোসিস, কিডনি ড্যামেজ, আর্থ্রাইটিস সহ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভয়ানক রোগের জন্মদাতা এই ডায়াবেটিস।

ডায়াবেটীসের আছে দুইটি প্রকার- টাইপ- 1 ডায়াবেটিস ও টাইপ- 2 ডায়াবেটিস। চলুন সাধারন স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রয়োজনে এই দুই প্রকার ডায়াবেটিসের প্রধান পার্থক্যগুলো জেনে নিই।

টাইপ-১ ডায়াবেটিস (Type-1 Diabetes)

ডায়াবেটিসের সাথে দুইটি বিষয় আবশ্যিকভাবে জড়িত। একটি হল- রক্তের চিনি বা সুগার, অন্যটি ইন্সুলিন (Insulin)। আমাদের খাওয়া ভাত ও চিনি জাতীয় খাবার বা শর্করা জাতীয় খাবার রক্তে আসে ‘সুগার’ বা চিনি আকারে। সাথে সাথে উৎপাদিত হয় ইনসুলিন হরমোন। ইনসুলিন রক্তের চিনিকে কোষে ঢুকিয়ে রক্তের চিনির স্বাভাবিক মাত্রা ঠিক রেখে আমাদেরকে বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচায়।

আমাদের দেহে ইনসুলিন উৎপাদনকারী একটি অঙ্গ হল অগ্ন্যাশয় (Pancreas)। কিন্তু কোন কারনে শরীরের অটোইমিউন সিস্টেম (Auto-immune System) যখন ইনসুলিন উৎপাদনকারী অগ্ন্যাশয় কোষগুলোকে ধ্বংস করে ইনসুলিন উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করে, তখন রক্তের চিনি আর কোষে ঢুকতে পারেনা। শুরু হয় নানারকম শারীরিক জটিলতার। এটাই টাইপ-1 ডায়াবেটিস।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস (Type-2 Diabetes)

টাইপ-২ ডায়াবেটিস (Type-2 Diabetes) হল বেসিক্যালি লাইফস্টাইলজনিত রোগ। যখন শর্করা, প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাবার প্রয়োজনের অতিরিক্ত আমাদের দেহে ঢুকে, সেগুলো শেষমেষ আমাদের কোষে জমা হয় চর্বি বা ফ্যাট আকারে। এভাবে জমতে জমতে কোষ যখন ‘ওভারলোডেড’ বা অতিরিক্ত ভারাক্রান্ত হয়ে যায়, তখন বাইরে থেকে আর চিনি বা সুগার কোষে ঢুকতে পারেনা। চিনি রক্তে জমা হতে থাকে এবং ডায়াবেটিস সাথে সম্পর্কিত সমস্ত শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে থাকে। এটাই টাইপ-2 ডায়াবেটিস।

টাইপ-2 ডায়াবেটিস সাধারনত বয়ষ্কদের হয়। তবে ইদানিং খাবারে ও লাইফস্টাইলে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির কারনে ছোটদেরও টাইপ-2 ডায়াবেটিস হচ্ছে, যাদের বয়স ২০ এর নিচে।

টাইপ-2 ডায়াবেটিস হলে প্রথাগতভাবে ডাক্তাররা অধিক ইনসুলিন প্রয়োগ করে রক্তের চিনিকে জোর করে কোষে ঢুকানোর চেষ্টা করেন, যা আরো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের ডাক্তার জাহাঙ্গীর কবির বলেন যে, ডায়াবেটিসের চিকিৎসার এটা একটা ভুল পদ্ধতি, যা বিশ্বব্যাপী অনুসরন করা হচ্ছে। ডাক্তার জাহাঙ্গীর কবির ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় শর্করা জাতীয় খাবার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়ে কোষ খালি করার উপরে জোর দেন। এই পদ্ধতিতে তিনি হাজার হাজার ডায়াবেটিস রোগীকে চিরতরে ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। এভাবে তিনি “ডায়াবেটিস রোগ কখনো ভাল হয়না” চিরাচরিত এই ধারনাকেও ভুল প্রমান করতে সমর্থ হয়েছেন।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে শর্করা বা চিনি জাতীয় খাবার এবং প্রোটিন ও ফ্যাট হিসাব করে খান।

মন্তব্য করুন